মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭

মানিকগঞ্জ জমিদারবাড়িতে একদিন

যখনই আমি কোনো রাজবাড়ি অথবা জমিদারবাড়ি ঘুরতে যাই, তখনই আমার কল্পনায় ওই প্রাসাদের একসময়কার কার্যপ্রণালী ভেসে উঠতে থাকে। যেসময় এই নিরবস্থান গুলো এমন নিরব ছিল না। রাজা, প্রজা, জমিদার, জমিদার পত্নী, গ্রামের মানুষ, প্রাসাদের দাসদাসী সব মিলিয়ে আমার মন তখন গল্প বানাতে শুরু করে, যেটা আমার  অনেক পছন্দের একটা ব্যাপার।


তাই কোনো জায়গায় ভ্রমণে গেলে সেই জায়গাটায় এমন কোন জমিদারবাড়ি অথবা রাজবাড়ি আছে কিনা সেই খোঁজ নিতে ভুল করি না। এবার শুধু জমিদারবাড়ি দেখার জন্যই পাড়ি জমালাম, ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জে, বালিয়াটি প্রাসাদে.....

             
আমরা পাঁচজন গাবতলী থেকে রওনা দিলাম দুপুর একটায়। এছাড়া ঢাকা-আশুলিয়া সড়ক দিয়েও চলে আসা যায় নবীনগর, অথবা, সরাসরি মানিকগঞ্জের বাসে করেও যাওয়া যায় মানিকগঞ্জের জমিদারবাড়িতে। তবে আমরা নবীনগর নেমে মধ্যাহ্নভোজন করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঘুরে রউনা দিলাম বালিয়াটি প্রাসাদে। 


তারপর বাসে করে রওনা দিলাম কালামপুর এর উদ্দেশ্যে। দশ টাকা ভাড়ায় 

আধ ঘন্টার মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম, ধামরাই কালামপুরে। 

আপনি ঢাকা থেকে সরাসরি আসলেও কালামপুরে নামাটা, 

আপনার সময় অনেকটুকু বাঁচিয়ে দেবে।




কালামপুর থেকে চাইলে অটোরিকশা রিসার্ভ করে যাওয়া যায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায়। যেহেতু আমরা পাঁচজন ছিলাম, তাই আমরা রিসার্ভ করে যাত্রা শুরু করলাম সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের বালিয়াটি প্রাসাদে।


                      
প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট পর আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষে পৌছালাম। সেখানে নেমেই ভেতরে ঢুকার জন্য পাঁচটি টিকিট কাটতে হল, প্রতি টিকিটের মূল্য ২০ টাকা করে। ঢুকেই টিকিট ছিড়ে ফেলে দিবেন না, কারণ, যদি ভেতরের যাদুঘরে ঢু মেরে আসতে চান,তবে টিকিটটির আপনার প্রয়োজন পড়বে।





ভেতরে ঢুকে প্রাসাদের কারুকাজ, কাঠামো দেখে আমরা অভিভূত। এখানে ছবির মাধ্যমে আংশিক কিছু নমুনা তুলে ধরা হল। সাতটি প্রাসাদ এবং ২০০ শয়ন কক্ষ বিশিষ্ট এই জমিদারবাড়িটি দাড়িয়ে আছে প্রায় ৬ একর জুড়ে।




এই বংশে পূর্বপুরুষ গোবিন্দ রাম সাহা ছিলেন ধনাঢ্য লবণ ব্যবসায়ী। তার পরবর্তী বংশধরগণ এইসব ইমারতের প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও বলতে হয়, এই বংশের বাবু কিশোরী লাল রায় ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করেন জগন্নাথ কলেজ। দেশে বিভিন্ন স্থানে স্কুল, কলেজ নির্মাণ করে, এই দেশের শিক্ষাযাত্রায়, গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিল এই জমিদার বংশের জমিদারেরা।




প্রাসাদের দ্বিতীয় তলার রংমহলটি নিয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তৈরি করেছে যাদুঘর। যেখানে জমিদারদের পরিচয় এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখা আছে। বলে রাখা ভাল,বিকেল ৫ টার পর গেইট বন্ধ করে দেয়া হয়, তখন কোন দর্শনার্থী ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না।




যদি সকালে রউনা দেয়া হয়, তাহলে মানিকগঞ্জের আরেকটি জমিদারবাড়ি 'টেওটা জমিদারবাড়ি' ঘুরে আসা সম্ভব। একদিনের বন্ধে ঢাকার অদূরে এই জমিদারবাড়ি দুটো হতে পারে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেয়া অপূর্ব ভ্রমণগুলোর একটি। নিচে 'টেওটা জমিদারবাড়ির কিছু ছবি দিয়ে শেষ করলাম, আমাদের আজকের ভ্রমণ।





এটিই সর্বশেষ পোস্ট
পূর্ববর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
এটিই সর্বশেষ পোস্ট
পূর্ববর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
 

FeedBurner কর্তৃক নিয়োজিত