ছোটবেলা থেকেই ঘুরে বেড়ানোর একটা প্রচন্ড নেশা ছিল। কিন্তু বাসা হতে
অনুমতি পাওয়া খুব কষ্টকর ছিল। কলেজে উঠার পর বাসার কড়া নিয়ম কানুন হতে একটু
রেহাই পেলাম। সময় পেলেই ঢাকার বাইরে কোথাও ঘুরে আসার চেষ্টা করি। সাধারণত
প্রায় প্রতি ঈদের ছুটিতেই কোথাও না কোথাও যাওয়া হয়। কখনও বন্ধুদের সাথে
কখনও ফ্যামিলির কারও সাথে। গত রোজার ঈদেও আমি আর ভাইয়া মিলে ঠিক করলাম
কোথাও ঘুরতে যাব। একদিনের ভ্রমণ। অনেক আলাপ আলোচনার পর ঠিক করলাম এবার
সিলেটের জাফলং এই যাব।
যেহেতু একদিনের ভ্রমণ তাই আগে থেকে তেমন কোন প্রস্তুতিই নেইনি আমরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদের পরদিন বিকেল বেলা বেড়িয়ে পড়লাম। ইচ্ছে ছিল ট্রেনে যাব। তাই প্রথমেই কমলাপুর রেল স্টেশনে যাই। কিন্তু আগে থেকে টিকেট না কাটায় কোন টিকেট পেলাম না। কি আর করা অগ্যতা বাসে চেপে যাওয়াই ঠিক হল। বাসে যাওয়ার জন্য রাত ১১টার দিকেই সায়দাবাদ বাস স্টেশন এ চলে গেলাম। টিকেটের দাম ৩০০টাকা থেকে শুরু। রাত ১২টার দুটো টিকেট কাটলাম। উত্তেজনার বশে কিভাবে যে এক ঘন্টা পার হয়ে গেল বলতেই পারব না। বাস, ট্রেনের দেরি করে আসার যে বদনামটা ছিল তার ব্যতিক্রম করে ঠিক ১২টা বাজেই বাস ছেড়ে দিল। আমার ভ্রমণের স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যে যাই বলুক বাস ভ্রমেণের সবচেয়ে ভাল ও উপযুক্ত সময় হল রাত। এমনিতেই ঈদের পরদিন, তারওপর ছিল রাত ১২টা এরকম নিরিবিলি বাস ভ্রমণ সত্যিই মনোমুগদ্ধকর।
আমার সিটটা ছিল জানালার পাশে। আমার পাশের সিটে ভাইয়া গভীর ঘুমে মগ্ন। বাসের প্রায় সকলেই ঘুমুচ্ছে। কিন্তু ঘুমের চেয়ে আশেপাশের দৃশ্যই আমাকে বেশি টানছিল। অনেকেই হয়ত বলবেন রাতেরবেলা আবার কিসের দৃশ্য? কিন্তু রাতেরবেলা চাঁঁদের আলোয় যে আকর্ষণ তা যে দেখেছে শুধু সেই বুঝবে। রাত প্রায় ২টার দিকে আমরা বিখ্যাত ভৈরব ব্রীজ্ এ এসে পৌঁছুলাম। ব্রীজটা রাতের বেলা আরও দৃষ্টিনন্দন লাগছিল।
অবশেষে ভোর ৫.৩০টার দিকে আমরা পৌঁছলাম সিলেটের কদমতলী। ভোরের হালকা কুয়াশায় মোড়া সিলেট শহরটিকে অপূর্ব দেখাচ্ছিল। সিলেটকে বলা হয় মাজারের শহর। সিলেটে এসে মাজারে যাব না, তা হয় নাকি?? সামান্য খোঁজখবর করে জানতে পারলাম সি.এন.জি. কিংবা টেম্পু জাতীয় গাড়ি পাওয়া যায়। যেগুলো হযরত শাহ্জালাল (রহঃ) এর মাজারে যায়। জনপ্রতি ২০টাকা করে। সেখান হতে সি.এন.জি. তে চড়ে আমরা হযরত শাহ্জালাল (রহঃ) এর মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। জায়গাটা বেশি দূরে নয়। প্রায় ২৫-৩০ মিনিটের মাথায় পৌঁছে গেলাম মাজারে। কি বিশাল আকার!!! সত্যিই বিস্ময়কর। হাজার হাজার লোকের সমাগম সেখানে। কেউ এসেছে নিজেদের মনোবাসনা পূরণের উদ্দেশ্য কেউবা আমদেরই মতো ঘুরতে। অনেক প্রাচীন কবর দেখতে পেলাম। এদের বেশিরভাগই হযরত শাহ্জালাল এর শিষ্য ছিলেন। জালালি কবুতর নামে একরকম কবুতর দেখলাম। সেগুলো নাকি শুধু ওখানেই পাওয়া যায়। মাজার এর বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম কুসংস্কারাছন্ন লোকদের কিছু ভন্ড ঠকিয়ে যাচ্ছে। যা দেখে সত্যিই খারাপ লাগল। ওখানে আমরা প্রায় ঘন্টাখানেক কাটালাম। মাজারের বাইরে সকালের নাস্তা খেয়ে সি.এন.জি. তে চড়ে রওনা দিলাম হযরত শাহ্পরাণ (রহঃ) এর মাজারের উদ্দেশ্যে। জনপ্রতি ভাড়া লেগেছিল ৩০টাকা। ৪০-৪৫ মিনিটের মাঝে পৌঁছে গেলাম সেখানে। ভেতরে ভেতরে জাফলং এ যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলাম। তাই, সেখানে আর বেশি সময় কাটাইনি। তবে মাজারের দেয়ালগুলোর পুরার্কীতি নকশাগুলো দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে ছিলাম। শাহ্পরাণ (রহঃ) এর মাজারের গেইট থেকেই জাফলং এ যাওয়ার জন্য বাস, টেম্পু পাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া প্রায় ৬০টাকা। সেরকম একটা টেম্পুতে করে আমরা রওনা দিলাম আমাদের জাফলং এর উদ্দেশ্যে। পাহাড়ি আকাবাকা রাস্তা, চিকন একটা রোড যার চারপাশে শুধু পাহাড়। বেশ লাগছিল ভ্রমণটা। রাস্তার পাশে ভারতের বিশাল বিশাল পাহাড় আর ঝর্ণা
দেখতে দেখতে প্রায় দুই ঘন্টা পর সকাল দশটার দিকে পৌঁছে গেলাম আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে। জাফলং এ।
কিছু ছবি...............।
ঝর্ণাগুলো সত্যিই সুন্দর। তাই না?
দুঃখের বিষয় কি জানেন ঝর্ণাগুলো শুধু দূর থেকেই দেখতে পারবেন। কাছে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এগুলো ভারতের সীমানায় পড়েছে।
জাফলং বাজারের পাশেই জাফলং নদী। ওখানে অনেক নৌকা পাওয়া যায়। দশটাকা জনপ্রতি ভাড়ায় নদী পার করে। নদীটি যে কাউকে মুগ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। বেশি গভীর না। পরিষ্কার পানি। একজন পূর্ণবয়ষ্ক লোকের গলা পর্যন্ত ডুবতে পারে সর্বোচ্চ। কিন্তু স্রোতের টান প্রচুর। সাতার না জানলে বিপদে পড়তে পারে যে কেউ। নদীতে প্রচুর নৌকা দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় সকল নৌকাকেই পাথর বহন করতে দেখা যায়।
ঘাট থেকে নৌকা পাওয়া যায়। সেই নৌকা দিয়ে ঝুলন্ত সেতু দেখতে গেলাম। ঘাট থেকে দেখা গেলেও অনেক দূর।
অনেকেই দেখলাম এখানে গোসল করছে। তাই আমরাও ওখানেই সেরে নিলাম গোসলটা। বেশ মজা হয়েছিল।
কি বিশাল এগুলোর আকার মনের হয় যেন শেষ নেই।
চা বাগান দেখে বিকেলের দিকে ফিরে এলাম জাফলং বাজার। সেখান থেকে বাসে চড়ে দেখতে গেলাম তামাবিল পয়েন্ট।
এখান দিয়েই ভারতীয় গাড়ি বাংলাদেশে ঢুকছে আবার বাংলাদেশি গাড়ি ঢুকছে ভারতে।
যেহেতু একদিনের ভ্রমণ তাই আগে থেকে তেমন কোন প্রস্তুতিই নেইনি আমরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদের পরদিন বিকেল বেলা বেড়িয়ে পড়লাম। ইচ্ছে ছিল ট্রেনে যাব। তাই প্রথমেই কমলাপুর রেল স্টেশনে যাই। কিন্তু আগে থেকে টিকেট না কাটায় কোন টিকেট পেলাম না। কি আর করা অগ্যতা বাসে চেপে যাওয়াই ঠিক হল। বাসে যাওয়ার জন্য রাত ১১টার দিকেই সায়দাবাদ বাস স্টেশন এ চলে গেলাম। টিকেটের দাম ৩০০টাকা থেকে শুরু। রাত ১২টার দুটো টিকেট কাটলাম। উত্তেজনার বশে কিভাবে যে এক ঘন্টা পার হয়ে গেল বলতেই পারব না। বাস, ট্রেনের দেরি করে আসার যে বদনামটা ছিল তার ব্যতিক্রম করে ঠিক ১২টা বাজেই বাস ছেড়ে দিল। আমার ভ্রমণের স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যে যাই বলুক বাস ভ্রমেণের সবচেয়ে ভাল ও উপযুক্ত সময় হল রাত। এমনিতেই ঈদের পরদিন, তারওপর ছিল রাত ১২টা এরকম নিরিবিলি বাস ভ্রমণ সত্যিই মনোমুগদ্ধকর।
আমার সিটটা ছিল জানালার পাশে। আমার পাশের সিটে ভাইয়া গভীর ঘুমে মগ্ন। বাসের প্রায় সকলেই ঘুমুচ্ছে। কিন্তু ঘুমের চেয়ে আশেপাশের দৃশ্যই আমাকে বেশি টানছিল। অনেকেই হয়ত বলবেন রাতেরবেলা আবার কিসের দৃশ্য? কিন্তু রাতেরবেলা চাঁঁদের আলোয় যে আকর্ষণ তা যে দেখেছে শুধু সেই বুঝবে। রাত প্রায় ২টার দিকে আমরা বিখ্যাত ভৈরব ব্রীজ্ এ এসে পৌঁছুলাম। ব্রীজটা রাতের বেলা আরও দৃষ্টিনন্দন লাগছিল।
অবশেষে ভোর ৫.৩০টার দিকে আমরা পৌঁছলাম সিলেটের কদমতলী। ভোরের হালকা কুয়াশায় মোড়া সিলেট শহরটিকে অপূর্ব দেখাচ্ছিল। সিলেটকে বলা হয় মাজারের শহর। সিলেটে এসে মাজারে যাব না, তা হয় নাকি?? সামান্য খোঁজখবর করে জানতে পারলাম সি.এন.জি. কিংবা টেম্পু জাতীয় গাড়ি পাওয়া যায়। যেগুলো হযরত শাহ্জালাল (রহঃ) এর মাজারে যায়। জনপ্রতি ২০টাকা করে। সেখান হতে সি.এন.জি. তে চড়ে আমরা হযরত শাহ্জালাল (রহঃ) এর মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। জায়গাটা বেশি দূরে নয়। প্রায় ২৫-৩০ মিনিটের মাথায় পৌঁছে গেলাম মাজারে। কি বিশাল আকার!!! সত্যিই বিস্ময়কর। হাজার হাজার লোকের সমাগম সেখানে। কেউ এসেছে নিজেদের মনোবাসনা পূরণের উদ্দেশ্য কেউবা আমদেরই মতো ঘুরতে। অনেক প্রাচীন কবর দেখতে পেলাম। এদের বেশিরভাগই হযরত শাহ্জালাল এর শিষ্য ছিলেন। জালালি কবুতর নামে একরকম কবুতর দেখলাম। সেগুলো নাকি শুধু ওখানেই পাওয়া যায়। মাজার এর বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম কুসংস্কারাছন্ন লোকদের কিছু ভন্ড ঠকিয়ে যাচ্ছে। যা দেখে সত্যিই খারাপ লাগল। ওখানে আমরা প্রায় ঘন্টাখানেক কাটালাম। মাজারের বাইরে সকালের নাস্তা খেয়ে সি.এন.জি. তে চড়ে রওনা দিলাম হযরত শাহ্পরাণ (রহঃ) এর মাজারের উদ্দেশ্যে। জনপ্রতি ভাড়া লেগেছিল ৩০টাকা। ৪০-৪৫ মিনিটের মাঝে পৌঁছে গেলাম সেখানে। ভেতরে ভেতরে জাফলং এ যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলাম। তাই, সেখানে আর বেশি সময় কাটাইনি। তবে মাজারের দেয়ালগুলোর পুরার্কীতি নকশাগুলো দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে ছিলাম। শাহ্পরাণ (রহঃ) এর মাজারের গেইট থেকেই জাফলং এ যাওয়ার জন্য বাস, টেম্পু পাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া প্রায় ৬০টাকা। সেরকম একটা টেম্পুতে করে আমরা রওনা দিলাম আমাদের জাফলং এর উদ্দেশ্যে। পাহাড়ি আকাবাকা রাস্তা, চিকন একটা রোড যার চারপাশে শুধু পাহাড়। বেশ লাগছিল ভ্রমণটা। রাস্তার পাশে ভারতের বিশাল বিশাল পাহাড় আর ঝর্ণা
দেখতে দেখতে প্রায় দুই ঘন্টা পর সকাল দশটার দিকে পৌঁছে গেলাম আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে। জাফলং এ।
কিছু ছবি...............।
ঝর্ণাগুলো সত্যিই সুন্দর। তাই না?
দুঃখের বিষয় কি জানেন ঝর্ণাগুলো শুধু দূর থেকেই দেখতে পারবেন। কাছে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এগুলো ভারতের সীমানায় পড়েছে।
জাফলং বাজারের পাশেই জাফলং নদী। ওখানে অনেক নৌকা পাওয়া যায়। দশটাকা জনপ্রতি ভাড়ায় নদী পার করে। নদীটি যে কাউকে মুগ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। বেশি গভীর না। পরিষ্কার পানি। একজন পূর্ণবয়ষ্ক লোকের গলা পর্যন্ত ডুবতে পারে সর্বোচ্চ। কিন্তু স্রোতের টান প্রচুর। সাতার না জানলে বিপদে পড়তে পারে যে কেউ। নদীতে প্রচুর নৌকা দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় সকল নৌকাকেই পাথর বহন করতে দেখা যায়।
ঘাট থেকে নৌকা পাওয়া যায়। সেই নৌকা দিয়ে ঝুলন্ত সেতু দেখতে গেলাম। ঘাট থেকে দেখা গেলেও অনেক দূর।
নৌকা ভাড়া করার সময় সাবধানে থাকতে হয়। এরা প্রচুর ভাড়া চায়। ২০০টাকায় অবশেষে আমরা নৌকা ঠিক করলাম।
পানির নিচে পাথর। সেই পাথরের উপর দিয়ে হাঁটা সত্যিই অন্যরকম অভিজ্ঞতা।
অনেকেই দেখলাম এখানে গোসল করছে। তাই আমরাও ওখানেই সেরে নিলাম গোসলটা। বেশ মজা হয়েছিল।
অনেক
মজা করে করলাম। প্রায় ২ ঘন্টা কাটানোর পর দুপুর ১টার দিকে আবার ফিরে এলাম
জাফলং বাজারে। এখান থেকে এক হোটেল এ দুপুরের খাবার খাওয়ার পর এবার রওনা
হলাম চা বাগান এর উদ্দেশ্যে।
নদী পার হয়ে ভ্যানগাড়ি পাওয়া যায়। তাতে করে চা বাগান দেখতে গেলাম।
কি বিশাল এগুলোর আকার মনের হয় যেন শেষ নেই।
চা বাগান দেখে বিকেলের দিকে ফিরে এলাম জাফলং বাজার। সেখান থেকে বাসে চড়ে দেখতে গেলাম তামাবিল পয়েন্ট।
এখান দিয়েই ভারতীয় গাড়ি বাংলাদেশে ঢুকছে আবার বাংলাদেশি গাড়ি ঢুকছে ভারতে।
ভাবলাম দেখি একটু ভারতে ঘুরে আসা যায় কিনা??
একটু এগুতেই দেখি.......
পাশে দেখি আবার বি.জি.বি ক্যাম্প। থাক বাবা!! দরকার কি!! এই ভেবে চলে এলাম।
ওখান থেকে বাস ধরে আবার সিলেটের কদমতলী ফিরে আসি। ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমেছে।
তারপর ঢাকার বাস ধরে ফিরে আসলাম আবার সেই ব্যস্ত ঢাকায়।
মাঝে মাঝে এরূপ নিরিবিলি কোথাও ঘুরতে গেলে আসলেই ভাল লাগে।। হোক না তা একদিনের ভ্রমণ।
নোটঃ এখানে দেওয়া বেশিরভাগ ছবি আমার নিজের তোলা... তবে, কিছু ছবি নেট থেকে সংগ্রহ করা... । 😎😎😎
নোটঃ এখানে দেওয়া বেশিরভাগ ছবি আমার নিজের তোলা... তবে, কিছু ছবি নেট থেকে সংগ্রহ করা... । 😎😎😎